ফেসবুক যেভাবে বদলে দিল জীবন
সামাজিক যোগাযোগের ওয়েবসাইট ফেসবুক কখনো কখনো প্রত্যাশার চেয়েও বেশি কাজে লেগে যায়। এই মাধ্যমকে সত্যিকারের কাজে লাগিয়ে জীবন বদলে যাওয়ার ঘটনাও হয়তো অনেকের চোখে পড়েছে।
তবে ফেসবুকের কল্যাণে জীবন বদলে যাওয়ার বেশ কিছু ঘটনা অনলাইনের জগতেও সৃষ্টি করেছে তোলপাড়। এমনই কয়েকটি ঘটনা উঠে এসেছে টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে:
শিশুকে বাঁচাতে সাহায্যের হাত বাড়ানো:
দুই বছরের শিশু সন্তানের মা লোনা স্ট্র্যাটন তাঁর প্রাণপ্রিয় মেয়েটিকে বাঁচানোর জন্য ফেসবুকের মাধ্যমে আবেদন করেছিলেন। শিশুটি জন্মের পর থেকেই একিউট লিমফোব্লাস্টিক লিউকেমিয়া (এএলএল) সমস্যায় ভুগছিল। শিশুটিকে বাঁচাতে সারা দুনিয়া থেকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন ফেসবুক ব্যবহারকারীরা। প্রত্যাশিত অর্থের চেয়েও বেশি জমা হয়েছিল শিশুটিকে বাঁচাতে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে অপারেশনের দুই সপ্তাহ পরই জটিলতার কারণে মারা যায় শিশুটি।
অনেকেই ফেসবুকে বিয়ের ছবি আপলোড করেন। কিন্তু বিয়ের ছবি আপলোড করে তারকা দম্পতি বনে যাওয়ার ঘটেছে সতীশ আপ্তের বেলায়। ৫৮ বছর বয়সী সতীশ বিয়ে করেন ২০ বছর বয়সী লিজাকে। এরপর নিজেদের বিয়ের সেলফি ফেসবুকে আপলোড করার পরই রীতিমতো তারকা বনে যান তাঁরা। সামাজিক যোগাযোগের ওয়েবসাইটে তাঁদের এই ছবি দ্রুতই ছড়িয়ে পড়ে এবং আলোচনার কেন্দ্রে চলে আসেন তাঁরা।
মা সব সময়ই ছেলের জন্য বিশেষ কিছু চান। ছেলের ৩০তম জন্মদিনে একজন মা চাইছিলেন সন্তানকে বিশেষ কোনো উপহার দিতে। কী দেওয়া যায়? ওই মা তাঁর স্বামীর ফেসবুক অ্যাকাউন্টে ছেলের জন্মদিনটি বিশেষ করে তোলার জন্য একটি পোস্ট দেন। এই পোস্টটিও ফেসবুক ব্যবহারকারীদের মধ্যে শোরগোল তোলে। ফলাফল? তাঁর ছেলের জন্মদিনে সারা দুনিয়া থেকে তিন হাজারেরও বেশি শুভেচ্ছা জানানো কার্ড এসে বাড়িতে জমা হয়। সেই সঙ্গে উপহার।
কেনেডি নামের একটি শিশু লিভারের সমস্যার আক্রান্ত। বিপদে পড়ে গেলেন তাঁর মা। বেছে নিলেন ফেসবুককে। সেখানেই জরুরি সাহায্য চেয়ে পোস্ট করলেন। বললেন, এমন কেউ কী আছেন যিনি লিভার দান করার মতো সাহস রাখেন? তাঁর এই পোস্টটিও ব্যাপক শেয়ার হয় এবং শেষ পর্যন্ত বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার চোখে পড়ে। শিশুটিকে বাঁচাতে এগিয়ে আসে সংস্থাটি।
পাঁচ বছর বয়সী অ্যাডালিয়া রোজ প্রোগেরিয়া নামের একটি জটিল রোগে আক্রান্ত। বিরল এই রোগটির কারণে শিশুর শরীরে বার্ধক্যের ছাপ পড়ে। তাঁর মায়ের সঙ্গে একটি ছবি তুলে সেই ছবি ফেসবুকে পোস্ট করা হলে তা ব্যাপক লাইক পায় এবং তাকে শুভেচ্ছাও জানান অনেকে। অ্যাডালিয়া ছবিতে লেখে, ‘আমি আর মা এখন একসঙ্গে’। ছবিটিতে প্রায় ২৩ লাখ লাইক ও ৫৫ হাজার মন্তব্য জমা হয়।
২২ বছর ধরে জেল খাটছিলেন দুই ভাই। নিজেদের নির্দোষ প্রমাণের কোনো সাক্ষ্য ছিল না। অবশেষে সাবেক এক প্রতিবেশীর ফেসবুক খুঁজে পাওয়া গেল নতুন এক সূত্র যা তদন্ত করে পাওয়া গেল নতুন প্রমাণ। ফেসবুকের কল্যাণে মুক্তি পেলেন তাঁরা।
প্রতিক্ষণ/এডি/পাপিয়া